Saturday, August 20, 2016

তেজপাতার গুনাগুন

শিরোনাম পড়ে নিশ্চয়ই মনে হচ্ছে, এ কী আজব কথা! স্বাস্থ্য ভালো রাখতে আবার তেজপাতাও পোড়াতে হবে নাকি? আরো কত কী যে শুনব? মজার বিষয়ই বটে! তবে আপনি কি জানেন, শতাব্দী ধরে তেজপাতা নিরাময়কারী এবং স্বাস্থ্যকর ভেষজ পাতা হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে?
কেবল তেজপাতা খেলে বা ব্যবহার করলেই নয়, পোড়ালেও কিন্তু অনেক উপকার পাওয়া যায়। স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলদি ফুড ট্রিকসে জানা গেল এই তথ্য।
একটি ছাইদানিতে কয়েকটি তেজপাতা নিয়ে ১০ মিনিট ধরে পোড়ান। এতে পাতা পুড়বে, পুড়বে এর মধ্যে থাকা এসেনশিয়াল অয়েলও। ধীরে ধীরে দেখবেন ঘরে সুগন্ধ ছড়াচ্ছে। ফলে গন্ধ মনকে সজীব করে দেবে। এটি মন ও শরীরকে প্রশমিত করতে সাহায্য করবে। এতে মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমবে।
প্রাচীন গ্রিক ও রোমানরা তেজপাতাকে পবিত্র ওষুধ বলত। বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে একে ব্যবহার করা হতো। সারা পৃথিবীতে অনেকেই এই পাতাকে মসলা হিসেবে ব্যবহার করেন। রান্নার স্বাদ বাড়াতে এবং সুগন্ধ আনতে এর ব্যবহার করা হয়।
তেজপাতার মধ্যে রয়েছে পিনেনে ও সাইনিয়ল নামে দুটি উপাদান। রয়েছে এসেনশিয়াল অয়েল। এর মধ্যে রয়েছে সাইকোঅ্যাকটিভ পদার্থ। তেজপাতা চিবালে এসব পদার্থ পাওয়া যায়।
এ ছাড়া এতে রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক, ডিওরেটিক, স্যাডেটিভ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান। এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এটি মেজাজকে ভালো করে। তেজপাতা পাকস্থলীর ফ্লু নিরাময়েও সাহায্য করে।
তেজপাতার মধ্যে আরো রয়েছে অ্যান্টিরিউম্যাটিক উপাদান। তেজপাতার এসেনশিয়াল অয়েল দিয়ে ম্যাসাজ করলে মাথাব্যথা কমে।
তেজপাতা
তেজপাতার ব্যবহারঃ 
  • অনেক সময় অনেকের ঘন ঘন তেষ্টা পায়। সেক্ষেত্রে ১ লিটার পানি তেজপাতা সেদ্ধ করে ছেঁকে নিয়ে ২-৩ বার খান। দেখবেন বার বার তেষ্টা পাচ্ছে না।

২. যারা খুব রোগা, তাদের জন্য তেজপাতা খুব উপকারী। চেহারা ফিরিয়ে আনতে তেজপাতা কুচিয়ে, থেঁতো করে ২ কাপ গরম পানিতে ১০-১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। এরপর ছেঁকে নিয়ে ২ বার করে ২ সপ্তাহ খেলে শরীরে জোর আসে, লাবণ্য ফিরে আসে।
  • দাদ হলে তেজপাতা থেঁতো করে ৪ কাপ জলে সেদ্ধ করে, সেই জল সকাল ও বিকেল খেতে হবে। ৪-৫ সপ্তাহ খেলেই দাদ-হাজা-চুলকানি সেরে যাবে।এছাড়া ওই পানি তুলোতে ভিজিয়ে দাদের জায়গায় দিয়ে মুছে নিলেও কাজ হয়।
  •  অনেক সময় প্রস্রাবের রঙ রক্তবর্ণ হয়। সেক্ষেত্রে তেজপাতা ২-৩ কাপ গরম জলে ২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। এরপর ছেঁকে ২-৩ ঘণ্টা অন্তর এই পানি খেলে। প্রস্রাবের রঙ সাদা হয়ে যাবে।
  •  তেজপাতা ত্বক পরিষ্কারের জন্য খুব ভাল। তেজপাতাকে চন্দনের মতো বেটে, স্নানের আগে গায়ে মেখে ঘণ্টা খানেক রাখুন। এরপর স্নান করে নিলে ময়লা উঠে যায়। এছাড়া যাদের গায়ে দুর্গন্ধ থাকে, তাদের সেই সমস্যাও দুর হয়ে যায়।
  • সর্দিতে গলা বুজে যায় অনেকেরই। সেই সময় জোরে জোরে কথা বললে বা চিৎকার করলে গলা ভেঙে যায়। এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে তেজপাতা থেঁতো করে ৩-৪ বার একটু করে খেলেই হবে।
  •  ফোঁড়া হলে যদি খুব যন্ত্রণা হয়, শক্ত হয়ে যায়, তবে এই অবস্থায় তেজপাতা বেটে ২-৩ বার প্রলেপ দিলে যন্ত্রণা কমে যাবে।
  • যাদের অতিরিক্ত ঘাম হয়, তার প্রতিদিন এক বার করে তেজপাতা বাটা মেখে আধ ঘণ্টা থাকার পর স্নান করে নিলে বেশি ঘাম হওয়া কমে যাবে। এইভাবে সাত দিন করতে হবে।
  • তেজপাতা জলে সিদ্ধ করে ছেঁকে ওই পানি কুলকুচি করলে মুখের অরুচি কেটে যায়।


0 comments:

Post a Comment

Thanks for your opinion.